মান্দায় রাস্তা বন্ধ করে সাত পরিবারকে গৃহবন্দি, অভিযোগ জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে


মাহবুবুজ্জামান সেতু : নওগাঁর মান্দা উপজেলার কাঁশোপাড়া ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামে রাস্তা বন্ধ করে সাতটি পরিবারকে গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নাদিরার নেতৃত্বে প্রভাবশালী একটি মহল গ্রামের একটি মাটির রাস্তা পাঁচটি স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়। ফলে ওই সাতটি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছে।



ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ৪-৫ দিন ধরে ওই রাস্তা দিয়ে কেউ চলাচল করতে পারছে না। এমনকি শিশুদের স্কুলে পাঠানো বা অসুস্থদের হাসপাতালে নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না।


স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউপি সদস্য নাদিরার সহযোগিতায় করিম, ইন্তাজ, সেকেন্দার, মকছেদ আলী, আজাদ গংরা রাস্তার বিভিন্ন অংশে বাঁশের বেড়া দেয়। এতে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন জব্বার, পুটি, আফসার, মঞ্জুয়ারা, মজিদ, জালাল ও আব্দুস সাত্তারসহ সাত পরিবারের সদস্যরা।


ভুক্তভোগীরা জানান, তারা বহু বছর ধরে এই রাস্তা ব্যবহার করে আসছেন। হঠাৎ করে স্থানীয় মেম্বার ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে রাস্তা বন্ধ করে দেন। তারা বলেন, “আমরা যেন নিজের বাড়িতেই বন্দি। জরুরি প্রয়োজনে বের হতে পারছি না। এটা কোন ধরনের বিচার?”


এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের আজাদ চকদার, সাইফুল, বানু, জনাব, বেলাল, মিষ্টি, সইদা ও জান্নাতুন গং-এর অতর্কিত হামলার শিকার হন তারা। এতে মুক্তার নামে এক নারীর ৬ আনার সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয়া হয়, সাইদুর রহমানের একটি স্মার্টফোনও ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।


পরে তারা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখনো পর্যন্ত বাঁশের বেড়া সরিয়ে রাস্তা খুলে দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।


এ বিষয়ে নাজমুল হক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে আমরা এমন আচরণ আশা করিনা। রাস্তা খুলে না দিলে তাদের জীবনযাত্রা অচল হয়ে যাবে। অতিদ্রুত বেড়াগুলো অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।”


অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য নাদিরা বলেন, “ভুক্তভোগীরা সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণে বাধা দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বাঁশের বেড়া দিয়েছি।”


এ বিষয়ে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, “৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অতি দ্রুত রাস্তা খুলে দিয়ে এলাকাবাসীর চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।”


ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ এবং স্থায়ী সমাধান দাবি করেছেন। তারা বলেন, “আমাদের একটাই দাবি—রাস্তা খুলে দেওয়া হোক। আমরা যেন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url